পোস্টেরিয়র ইউরেথ্রাল ভালভ (PUV)

প্রসাবের রাস্তায় পর্দা। posterior urethral valve

পোস্টেরিয়র ইউরেথ্রাল ভালভ (PUV) কী ❓️

পোস্টেরিয়র ইউরেথ্রাল ভালভ (PUV) হলো একটি জন্মগত সমস্যা, যা পুরুষ শিশুদের মধ্যে সাধারণত দেখা যায়। এটি মূত্রনালির একটি প্রতিবন্ধকতা বা ব্লকেজ, যা ব্লাডারে মূত্র জমা হওয়ার কারণ হতে পারে। মূত্রনালির পিছনের অংশে (পোস্টেরিয়র) এক ধরনের পাতলা টিস্যু বা ঝিল্লি তৈরি হয়, যা মূত্র প্রবাহকে বাধা দেয়।

পোস্টেরিয়র ইউরেথ্রাল ভালভ (PUV) কেন হয়?

পোস্টেরিয়র ইউরেথ্রাল ভালভ (PUV) একটি জন্মগত ত্রুটি, যা গর্ভাবস্থার সময় বিকশিত হয়। এটি তখন ঘটে যখন ভ্রূণের বিকাশের সময় পুরুষ শিশুর মূত্রনালির (ইউরেথ্রা) পিছনের অংশে (পোস্টেরিয়র) একটি পাতলা ঝিল্লি বা টিস্যু গঠিত হয়, যা প্রস্রাবের স্বাভাবিক প্রবাহকে বাধা দেয়।

PUV কেন হয় তার সঠিক কারণ এখনও পুরোপুরি পরিষ্কার নয়। তবে, এটি সাধারণত ভ্রূণের স্বাভাবিক বিকাশের সময় জিনগত বা অজানা কারণে ত্রুটির কারণে ঘটে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে এটি কিছু ক্ষেত্রে পরিবারের মধ্যে দেখা যেতে পারে, তবে সাধারণত এটি একক এবং বিক্ষিপ্ত ঘটনা হিসেবে ঘটে।

এর সঠিক কারণ সম্পর্কে গবেষণা চলছে, তবে এটি বোঝা যায় যে এটি মূলত গর্ভের ভেতরে ইউরিনারি ট্র্যাক্টের অস্বাভাবিক গঠনের কারণে হয়।

PUV-এর লক্ষণসমূহ:

  • প্রস্রাব করতে কষ্ট হওয়া বা বেগ অনুভব করা
  • প্রস্রাবের ধারা ক্ষীণ বা ছেঁড়া হওয়া
  • মূত্রথলির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি
  • বার বার প্রস্রাবের সংক্রমণ (ইউটিআই)
  • পেটের নিচে বা কোমরের ব্যথা
  • শিশুদের মধ্যে প্রস্রাবের সময় কান্না করা বা অস্বস্তি প্রকাশ করা

চিকিৎসা:

PUV এর চিকিৎসা সাধারণত সার্জারির মাধ্যমে করা হয়। এক্ষেত্রে ইউরোলজিস্ট ভালভের বাধা দূর করার জন্য সিস্টোস্কোপির মাধ্যমে ভালভ কেটে ফেলতে পারেন। এছাড়া, মূত্রথলির চাপ কমাতে এবং কিডনির কার্যকারিতা বজায় রাখতে মেডিকেল ম্যানেজমেন্টও প্রয়োজন হতে পারে।

PUV একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা, তাই সময়মত সঠিক চিকিৎসা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ডাঃ এস, এম, নাজমুল ইসলাম
শিশু বিশেষজ্ঞ সার্জন ও শিশু ইউরোলজিসট
সহকারী অধ্যাপক
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট।
Hotline: 01777331511

যে খাবার খেলে কিডনীর ক্ষতি হয়

কিডনির সঠিক কাজ বজায় রাখতে, কিছু খাবার ও পানীয় পরিমিতভাবে খাওয়া উচিত। অতিরিক্ত বা নিয়মিতভাবে এসব খাবার গ্রহণ করলে কিডনির ক্ষতি হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে:

1. অতিরিক্ত লবণ: বেশি লবণযুক্ত খাবার কিডনিতে চাপ সৃষ্টি করে, যা উচ্চ রক্তচাপ এবং কিডনির ক্ষতির কারণ হতে পারে।

2. প্রসেসড ফুড: প্রসেসড বা প্যাকেটজাত খাবারে অতিরিক্ত লবণ ও রাসায়নিক থাকে, যা কিডনির জন্য ক্ষতিকর।

3. মিষ্টি খাবার ও পানীয়: বেশি চিনি গ্রহণ করলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে, যা কিডনির ক্ষতি করতে পারে।

4. লাল মাংস: বেশি পরিমাণে লাল মাংস খাওয়া কিডনিতে প্রোটিনের চাপ বাড়ায় এবং ক্রনিক কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

5. অ্যালকোহল: অতিরিক্ত মদ্যপান কিডনির কার্যক্ষমতা হ্রাস করতে পারে।

6. কৃত্রিম মিষ্টি ও স্ন্যাকস: এই ধরনের খাবারে ফসফেট এবং অ্যাডিটিভ থাকে, যা কিডনির জন্য ক্ষতিকর।

7. সফট ড্রিঙ্ক ও এনার্জি ড্রিঙ্ক: এগুলোতে অতিরিক্ত চিনি ও ক্যাফেইন থাকে, যা কিডনির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

8. উচ্চ প্রোটিনযুক্ত ডায়েট: প্রোটিনের অতিরিক্ত পরিমাণ গ্রহণ কিডনিতে চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

স্বাস্থ্যকর কিডনি বজায় রাখতে, পানি বেশি পান করুন, ফল ও সবজি বেশি খান এবং প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

ডাঃ এস, এম, নাজমুল ইসলাম

এমবিবিএস, এমএস( শিশু সার্জারী)

পেডিয়েট্রিক ইউরোলজি ট্রেনিং(ইন্ডিয়া)

ইউরোলজি ট্রেনিং (BSMMU)

নবজাতক, শিশু-কিশোর সার্জারী বিশেষজ্ঞ

সহকারী অধ্যাপক

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট।

Hotline: 01777331511

www.drnazmulislam.com

#শিশু_সার্জন #শিশু_সার্জারি #শিশু_ইউরোলজি

শিশুরা প্রসাব করার সময় কান্না করে কেন?

শিশুরা প্রস্রাব করার সময় কান্নাকাটি করার কারণগুলো সাধারণত তাদের শরীরের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া বা কোনো অস্বস্তির কারণে হতে পারে। কিছু সাধারণ কারণ হলো:

1. অস্বস্তি বা ব্যথা: 💠
শিশুর প্রস্রাবের পথে সংক্রমণ (UTI) বা যেকোনো ধরনের জ্বালাপোড়া হলে তারা প্রস্রাবের সময় ব্যথা অনুভব করে, যা কান্নার কারণ হতে পারে।

2. ভেজা অনুভব:💠
প্রস্রাব করার পর ভেজা অবস্থায় থাকা তাদের জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে। তারা এটি বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য কান্না করে।

3. অজানা অনুভূতি:💠
নবজাতক শিশুদের জন্য প্রস্রাব করার প্রক্রিয়া একটি নতুন অনুভূতি হতে পারে, যা তাদের অস্বস্তিকর বা অদ্ভুত লাগতে পারে।

4. ঠান্ডা বা গরম লাগা:💠
প্রস্রাবের সময় শরীর ঠান্ডা বা গরম অনুভব করলে শিশুরা অস্বস্তি অনুভব করে এবং কান্না করতে পারে।

5. ক্ষুধা বা ক্লান্তি:💠
অনেক সময় শিশু ক্লান্ত বা ক্ষুধার্ত হলে প্রস্রাবের সময় কান্না করে।

যদি শিশুর কান্নার সঙ্গে প্রস্রাবের রঙ পরিবর্তন, জ্বর বা অতিরিক্ত জ্বালাপোড়া দেখা যায়, তবে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ডাঃ এস, এম, নাজমুল ইসলাম
এমবিবিএস,  এমএস( শিশু সার্জারী)
মেম্বার হাইপোসপেডিয়াস ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি
পেডিয়েট্রিক ইউরোলজি ট্রেনিং(ইন্ডিয়া)
ইউরোলজি ট্রেনিং (BSMMU)
নবজাতক, শিশু-কিশোর সার্জারী বিশেষজ্ঞ 
সহকারী অধ্যাপক
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট।
Hotline: 01777331511
www.drnazmulislam.com

শিশুর মাসিকের রাস্তা বন্ধ বা ল্যাবিয়াল অ্যাডহেশন (Labial Adhesion)

শিশুর মাসিকের রাস্তা বন্ধ বা ল্যাবিয়াল অ্যাডহেশন (Labial Adhesion)

শিশুর মাসিকের রাস্তা বন্ধ বা ল্যাবিয়াল অ্যাডহেশন (Labial Adhesion) হলো একটি শারীরিক অবস্থা যেখানে যোনির দুই পাশের ল্যাবিয়া মাইনোরা একে অপরের সঙ্গে লেগে যায় বা বন্ধ হয়ে যায়। এটি সাধারণত ছোট মেয়েদের ক্ষেত্রে দেখা যায় এবং সাধারণত কোনো গুরুতর সমস্যা নয়। তবে কখনো কখনো এটি চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।

ল্যাবিয়াল অ্যাডহেশনের কারণ ▶️
1. এস্ট্রোজেন হরমোনের ঘাটতি: শিশুর বয়স কম থাকায় শরীরে এস্ট্রোজেনের মাত্রা কম থাকে।
2. ইনফেকশন বা প্রদাহ: ডায়াপার র‍্যাশ, প্রস্রাবে জ্বালা, বা যোনি অঞ্চলের প্রদাহের কারণে ল্যাবিয়া একসঙ্গে লেগে যেতে পারে।
3. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব: যোনি এলাকা অপরিষ্কার থাকলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
4. আঘাত বা জ্বালাপোড়া: স্থানীয় আঘাত বা ইনফেকশন থেকে চামড়া জুড়ে যেতে পারে।

লক্ষণ ▶️
• প্রস্রাব করার সময় ব্যথা বা অসুবিধা।
• যোনি প্রবেশপথ আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ।
• প্রস্রাব একসঙ্গে বের না হয়ে ছিটকে অন্যদিকে যাওয়া।
• যোনি অঞ্চলে লালচে বা ফোলা ভাব।

চিকিৎসা ▶️
মৃদু অবস্থায় (Self-Care):🔅
• অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটি বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে (এস্ট্রোজেনের বৃদ্ধি) ঠিক হয়ে যায়।
• প্রতিদিন হালকা উষ্ণ পানিতে পরিষ্কার রাখুন।
• যোনি এলাকায় ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
মেডিক্যাল চিকিৎসা:🔅
1. এস্ট্রোজেন ক্রিম:
• ডাক্তারের পরামর্শে স্থানীয়ভাবে এস্ট্রোজেন ক্রিম ব্যবহার করা হয়।
• এটি ল্যাবিয়াকে আলাদা করতে সাহায্য করে।
2. স্টেরয়েড ক্রিম:
• যদি এস্ট্রোজেন ক্রিম কাজ না করে, তবে স্টেরয়েড ক্রিম ব্যবহার করা হতে পারে।
সার্জারি (অত্যন্ত গুরুতর ক্ষেত্রে):🔅
• যদি ক্রিম বা সাধারণ চিকিৎসায় কাজ না হয়, তবে ডাক্তার ল্যাবিয়া আলাদা করার জন্য ছোট একটি সার্জিকাল পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন।
• এটি খুবই নিরাপদ এবং সাধারণত দ্রুত সেরে যায়।

প্রতিরোধ ▶️
1. প্রতিদিন শিশুর যোনি এলাকা পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন।
2. ডায়াপার বদলের সময় যত্ন নিন।
3. ডায়াপার র‍্যাশ বা যেকোনো প্রদাহ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা করুন।
4. যোনি অঞ্চলে খসখসে কাপড় বা সাবান ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।

ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগের সময় ▶️
• যদি শিশুর প্রস্রাবে কোনো সমস্যা হয়।
• যদি প্রদাহ বা ব্যথা বাড়তে থাকে।
• যদি ঘরে চিকিৎসা করার পরেও ল্যাবিয়া আলাদা না হয়।
সঠিক যত্ন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসা নিলে এটি সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য।

ডাঃ এস, এম, নাজমুল ইসলাম
এমবিবিএস,  এমএস( শিশু সার্জারী)
মেম্বার হাইপোসপেডিয়াস ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি
পেডিয়েট্রিক ইউরোলজি ট্রেনিং(ইন্ডিয়া)
ইউরোলজি ট্রেনিং (BSMMU)
নবজাতক, শিশু-কিশোর সার্জারী বিশেষজ্ঞ 
সহকারী অধ্যাপক
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট।
Hotline: 01777331511
www.drnazmulislam.com