মুসলমানি নিয়ে নানা প্রশ্ন

মুসলমানি বা খতনা নিয়ে সাধারণত কিছু প্রশ্ন উঠে আসে, বিশেষ করে স্বাস্থ্য, বয়স, পদ্ধতি, ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে। এখানে কিছু সাধারণ প্রশ্ন ও তাদের উত্তর দেওয়া হলো:

♦️ ১. মুসলমানি কেন করা হয় ❓
> ধর্মীয় কারণে মুসলমান, খ্রিস্টান, ইহুদিরা খতনা করিয়ে থাকে।
> Phimosis বা Paraphimosis হলে।
> smegmal cyst ( চামড়ার নিচে ময়লা জমে টিউমার এর মতো) হলে অপারেশন করতে হয়।
> Balanitis বা balanoposthitis বার বার হলে।
> পুরুষাঙ্গের চামড়া অনেক সময় প্যান্টের জিপারের সঙ্গে আটকে গেলে।
♦️ ২. মুসলমানি করার স্বাস্থ্যগত সুবিধা কী কী ❓
> স্মেগমাল সিস্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
> পুরুষাঙ্গের ক্যানসারের ঝুঁকি কমে যায়।
> যৌনবাহিত রোগের ঝুঁকি কমে যায়।
> ফাইমোসিস, প্যারাফাইমোসিস রোগ হওয়ার সম্ভাবনা আর থাকে না।
> প্যান্টের জিপারের সাথে ইনজুরির হার কমে যায়।
> Balanitis হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
♦️ ৩. মুসলমানি করানোর সঠিক বয়স কত ❓
মুসলমানি সাধারণত শৈশবেই করানো হয়, তবে ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো নির্দিষ্ট বয়স বাধ্যতামূলক নয়। অনেক অভিভাবক জন্মের পরপরই বা শিশুটি কিছুটা বড় হলে, অর্থাৎ কয়েক মাস থেকে কয়েক বছর বয়সে করিয়ে থাকেন। সাধারণত কোন সমস্যা না থাকলে বাচ্চার বয়স ১ বছর হলে মুসলমানি করানো ভালো। ১ বছরের আগে যদি কোন সমস্যা থাকে যা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে তবে মুসলমানি করিয়ে ফেলতে হবে।
♦️ ৪. মুসলমানি করানোর বিভিন্ন পদ্ধতি কী কী ❓
• সাধারণত দুই ধরনের পদ্ধতি বেশি প্রচলিত:
• সার্জিকাল কাটিং: যেখানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চামড়া কাটা হয়।
• ক্ল্যাম্পিং পদ্ধতি: প্লাস্টিবেল্ট বা ক্ল্যাম্প নামক একটি সরঞ্জাম ব্যবহার করে ফোরস্কিন কাটা হয়।
• প্রতিটি পদ্ধতিরই নিজস্ব সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে এবং সেগুলো প্রয়োগের আগে ডাক্তারদের সাথে আলোচনা করা গুরুত্বপূর্ণ।
. • আবার ঘুম পাড়িয়ে বা অজ্ঞান করে এবং স্থানীয় ভাবে অবশ করেও করা যায় | সাধারণত ৫/৬ বছরের উপরের বাচ্চাদের স্থানীয় ভাবে অবশ করে করা হয় | তবে ছোট বাচ্চা হলে ঘুম পাড়িয়ে করা ভালো |
♦️ ৫. মুসলমানির পর কী ধরনের যত্ন নেওয়া উচিত ❓
• মুসলমানির পরে জায়গাটি পরিষ্কার রাখতে হবে এবং জীবাণুমুক্ত ব্যান্ডেজ ব্যবহার করতে হবে।
• ডাক্তারের নির্দেশিত অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম বা পাউডার প্রয়োগ করা যেতে পারে।
• ক্ষত পুরোপুরি সেরে না যাওয়া পর্যন্ত শিশুটিকে আরামদায়ক ও ঢিলেঢালা পোশাক পরাতে হবে, যাতে জায়গাটি গরম বা ঘর্মাক্ত না হয় এবং সংক্রমণের ঝুঁকি কম থাকে।
♦️ ৬. মুসলমানি করা কি নিরাপদ ❓
• যদি মুসলমানি অভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা স্বাস্থ্যকর পরিবেশে সঠিকভাবে করা হয়, তবে এটি সাধারণত নিরাপদ এবং ঝুঁকি কম। তবে বয়স, স্বাস্থ্যের অবস্থা, এবং পদ্ধতির উপর নির্ভর করে কিছু সাধারণ ঝুঁকি থাকতে পারে, যেমন রক্তপাত, সংক্রমণ, বা ব্যথা। তাই এটি সবসময় দক্ষ ডাক্তার দ্বারা করানো উচিত।
♦️ ৭. মুসলমানি না করালে কি সমস্যা হতে পারে ❓
• মুসলমানি না করলে সবসময়ই কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা হবে এমন নয়, তবে কিছু স্বাস্থ্য ঝুঁকি যেমন ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন বা পেনাইল ইনফেকশন বেশি হতে পারে। মুসলমানির উদ্দেশ্য ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার মান বৃদ্ধি করা।
মুসলমানি নিয়ে প্রশ্ন থাকলে বা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ডাঃ এস, এম, নাজমুল ইসলাম
পেডিয়েট্রিক ইউরোলজি ট্রেনিং (ইন্ডিয়া)
ইউরোলজি ট্রেনিং ( BSMMU )
সহকারী অধ্যাপক
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট।
Hotline: 01777331511
www.drnazmulislam.কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *