শিশুর গ্যাজ রোগ বা এনাল ফিশার হলো মলদ্বারের চারপাশে ত্বকের ফেটে যাওয়া বা ক্ষত হওয়ার একটি অবস্থা। এটি সাধারণত মলত্যাগের সময় ব্যথা, অস্বস্তি, এবং রক্তপাতের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
শিশুদের মধ্যে এনাল ফিশার কেন হয়?
১. কঠিন মল (কোষ্ঠকাঠিন্য): কঠিন বা বড় আকারের মল ত্যাগ করার কারণে মলদ্বারের ত্বক ফেটে যেতে পারে।
২. ডায়রিয়া: ঘন ঘন পাতলা মল ত্যাগ করলে মলদ্বারের চারপাশে জ্বালা বা ফাটল দেখা দিতে পারে।
৩. মলদ্বারে চুলকানি: অতিরিক্ত চুলকানি বা ঘষার কারণে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
৪. আঘাত: শিশুদের মলদ্বারে কোনো আঘাত লাগলে ত্বক ফেটে যেতে পারে।
লক্ষণ
- মলত্যাগের সময় বা পরে ব্যথা।
- মলের সঙ্গে সামান্য তাজা রক্ত (লাল রঙের)।
- মলদ্বারের আশপাশে ফাটল বা ক্ষত।
- বাচ্চার কান্না বা অস্বস্তি (বিশেষত মলত্যাগের সময়)।
প্রাথমিক চিকিৎসা
১. কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করা:
- শিশুকে বেশি করে তরল খাওয়ান।
- ফল এবং আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করুন (যদি বাচ্চার বয়স ৬ মাসের বেশি হয়)।
২. উষ্ণ পানির সিটজ বাথ:
- মলদ্বারের চারপাশ পরিষ্কার রাখতে এবং ব্যথা কমাতে দিনে ২-৩ বার উষ্ণ পানিতে শিশুকে বসান।
৩. মল নরম করার ওষুধ:
- ডাক্তারের পরামর্শে ল্যাক্সেটিভ বা মল নরম করার ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।
৪. মলদ্বার পরিষ্কার রাখা:
- প্রতিবার মলত্যাগের পর শিশুর মলদ্বার হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করুন।
- গ্লিসারিন বা শিশুদের জন্য নিরাপদ মলম ব্যবহার করা যেতে পারে।
কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি?
- যদি ক্ষত কয়েক দিনের মধ্যেও ভালো না হয়।
- যদি মলের সঙ্গে রক্ত বেশি বের হয়।
- যদি শিশুর ক্ষত সংক্রমিত (লালচে, ফুলে যাওয়া বা পুঁজ) হয়।
- যদি শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য দীর্ঘস্থায়ী হয়ে যায়।
ডাক্তার হয়তো বিশেষ মলম বা অ্যান্টিবায়োটিক দিতে পারেন এবং গুরুতর ক্ষেত্রে আরও পরীক্ষার পরামর্শ দেবেন।
পরামর্শ: শিশুদের মলত্যাগে স্বাভাবিক অভ্যাস বজায় রাখতে সঠিক খাবার এবং তরল গ্রহণ নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।